ব্রিটেন এবং কমনওয়েলথের অন্যান্য দেশ যেমন দক্ষিণ এশিয়া, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড বানান লিখে colour. আমেরিকানরা লিখে color. অন্যান্য দেশে যার যে ইচ্ছা সেভাবে লেখে। কম্পিউটার এবং ডিজিটাল টেকনোলজি প্রবর্তনের ফলে আমেরিকার শব্দগুলো ক্রমশ প্রাধান্য লাভ করে চলেছে। দুই দেশের ভাষার পার্থক্য নিয়ে কিছু কথা জানা থাকলে আপনার ব্যবহারিক জীবনে কাজে লাগবে, জ্ঞানভাণ্ডার অল্প বিস্তর সমুন্নত হবে বলে আশা করি।
আমেরিকা এবং বৃটেনের মধ্যে অনেক বিষয়ে রেষারেষি আছে। ইংরেজি ভাষা নিয়েও তেমনি দুই দেশের মধ্যে বেশ পার্থক্য আছে।
এক আমেরিকানের সাথে ইংরেজের বিতর্ক চলছিল, Elevator (এলিভেটর) ও lift (লিফট) এ দুটো শব্দের মধ্যে কোনটা সঠিক। আমেরিকানের দাবি এলিভেটর তারাই আবিষ্কার করেছিল কাজেই শব্দটি সঠিক। ইংরেজ বলল, ইংরেজি ভাষাটা কিন্তু আমরাই আবিষ্কার করেছিলাম।
বাংলা ভাষার ক্ষেত্রে যেমন নদীয়া শান্তিপুরের ভাষাকে মানদণ্ড হিসেবে গণ্য করা হয়, ব্রিটিশ ইংরেজি সে ভাষার স্ট্যান্ডার্ড হিসেবে গণ্য করা হয়। তবে, খর্ব শক্তির ব্রিটেনকে এখন কেউ মুরব্বি বলে মানতে চায় না। আমেরিকা তো নয়ই।
ইংল্যান্ডের ভাষাকে বলে কুইন্স ইংলিশ। অবশ্য, সবাই যে কুইন্স ইংলিশ ব্যবহার করে তা নয়। ইংল্যান্ডের উত্তরাঞ্চলের জনপদে ইংরেজি ভাষা আলাদা লেবাস পরে রয়েছে। সেখানকার কোন কোন অঞ্চলে লোকজন বলে, We eat tea. খোদ লন্ডনের পূর্বাংশে বিচিত্র উচ্চারণ ও স্লান্গ ব্যবহার করে যে ভাষায় কথা বলে তার নাম Cockney English. অড্রে হেপবার্ন এবং রেক্স হ্যারিসন অভিনীত অনবদ্য এবং আমার সব চাইতে পছন্দের My fair lady ছায়াছবিতে সে ভাষার পরিচয় পাওয়া যায়।
আটলান্টিকের পূর্ব প্রান্তে ইংরেজরা বলে গাড়ির বনেট, পশ্চিম প্রান্তে আমেরিকানরা বলে গাড়ির হুড।
আমেরিকায় কর্মক্ষেত্র থেকে ছুটি নিয়ে কোথাও বেড়াতে যাওয়াকে বলে vacation, ব্রিটিশরা holiday. আমেরিকানরাও বলে holiday কিন্তু তা বিশেষ বিশেষ দিনের জন্য যেমন স্বাধীনতা দিবস ও ক্রিসমাস।
আমেরিকানরা বাস করে অ্যাপার্টমেন্টে, ব্রিটিশরা ফ্ল্যাটে।
এভাবে আরো কয়েকশো শব্দের পার্থক্য রয়েছে। এ কারণে জর্জ বার্নার্ড শ বলেছিলেন, America and Britain are two countries divided by a common language.
আমেরিকান ইংলিশের অভিধান প্রণয়নে মুখ্য ভূমিকা রাখেন Webster। তিনি সহজ সরলভাবে বানান রীতি প্রচলন করেন। ইংরেজি ভাষার অনেক শব্দ থেকে অনাবশ্যক u বিদায় করে দিয়ে বানান লিখলেন colour=color, honour= honor. তার অবশ্য যুক্তি ছিল। ইংরেজি ভাষার উৎস ল্যাটিন ভাষায় এ ধরনের শব্দে u অক্ষরটি নাই। ফরাসিরা একটা বাড়তি u ঢুকিয়ে দিয়েছে। ইংরেজরা ফরাসিদের নকল করে একই কাজ করেছে। সে কারণে u বাদ দিলে তাদের দোষ দেওয়া যায় না।
আবার, ব্রিটিশদের ভাষায় যেসব শব্দের শেষে ise রয়েছে, উচ্চারণের সাথে সামঞ্জস্য রেখে তা পরিবর্তন করে ওয়েবস্টার লিখলেন ize দিয়ে। যেমন, utilise এর পরিবর্তে utilize, patronise এর পরিবর্তে patronize। এদিক দিয়েও আমেরিকানদের যুক্তি খণ্ডন করা যায় না।
ইংল্যান্ড ও আমেরিকার দু’জন শিক্ষকের মধ্যে আলোচনায় দু’দেশের ভাষার বৈচিত্র সম্পর্কে একটা কৌতুক বলে আলোচনার ইতি টানছি। আমেরিকান শিক্ষক বললেন, তোমাদের দেশে কি হোস্টেলে ছাত্র-ছাত্রীদের ডেট অ্যালাও করো? (আমেরিকার date অন্য জিনিস; গার্লফ্রেড বা বয়ফ্রেন্ডকে বোঝায়।)বিলেতের টিচার কি অত শত বুঝেন?( তিনি জানেন date অর্থ খেজুর।) সরল মনে উত্তর দিলেন, আমরাও অল্পস্বল্প খেতে দেই। বেশি খেলে পেটের সমস্যা হয়।