বাস্তব অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে জীবন থেকে নেওয়া কয়েকটি উপদেশমালা।
- বিপদের দিনে বন্ধুবান্ধব, ব্যবসায়ীক পার্টনার, অফিসের সহকর্মী, আত্মীয়-স্বজন অনেকেই মুখ ফিরিয়ে নেন। কিন্তু আপনার পরিবার আপনার পাশে এসে দাঁড়াবে। অতীতের বৈরিতা, রেষারেষি থাকলেও তা ভুলে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিবে। পরিবার বলতে মূলত স্ত্রী-পুত্র পিতা-মাতা বোঝায়। বর্ধিত পরিবারের কেউ কেউ এগিয়ে আসে কিন্তু অনেকেই দূরে থাকতে পছন্দ করে। ইংরেজীতে একটা কথা আছে In the end, family is all you have.
- সুখী সুন্দর জীবন যাপনের জন্য বিস্তর ধন-সম্পদ, বিলাসবহুল বাড়ি, দামি গাড়ির বিশেষ ভূমিকা রাখে না। সরল জীবনযাপন, অল্পে সন্তুষ্টি, ইংরেজিতে যাকে বলে contentment, সুখে থাকার উত্তম চাবিকাঠি।
- “সর্বদা সত্য কথা বলিবে” নীতি অনুসরণ করা মোটেই কঠিন কাজ নয়। মিথ্যা কথা বলার আগে যদি চিন্তা করেন তাহলে আপনার বুঝতে দেরি হবে না মিথ্যার আশ্রয় নেয়া মোটেই প্রয়োজন নেই। বছরের-পর-বছর দিব্যি মিথ্যা না বলে কাটিয়ে দিতে পারবেন।
- গরিব দুঃখিদের সাহায্য করলে, বিপদের দিনে কাউকে হাত বাড়িয়ে দিলে, সৃষ্টিকর্তা বলেন কিংবা প্রকৃতি আপনাকে তার প্রতিদান দিবে। তার মধ্যে তাৎক্ষণিকভাবে পাবেন মনের প্রশান্তি। পরবর্তীতে, আপনার বিপদের দিনে কোথা থেকে কেউ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিবে।
- অনেককে উপকার করলে তাদের মধ্যে কেউ কেউ তা ভুলে যায়, এমনকি অবজ্ঞা করতেও দ্বিধা করে না। এ ধরনের নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া মোটেই গায়ে মাখবেন না। আপনার নীতিতে বহাল থাকবেন।
- কারো সাথে ঝগড়া বিবাদ হলে তার সাথে লড়াই চালিয়ে গেলে বিপদ ডেকে আনবেন না কিনা তা ভেবে দেখতে হবে। এক্ষেত্রে নীতি হচ্ছে Don’t show your teeth if you cannot bite. কামড়াতেই যদি না পারেন দাঁত দেখিয়ে লাভ কি?
- বেকুব টাইপের লোকর সাথে তর্কে লিপ্ত হয় অযথা শক্তি এবং সময় নষ্ট করা মোটেই উচিত নয়। যতই যুক্তি দেখান না কেন সে আলতু ফালতু অপ্রাসঙ্গিক বিষয় টেনে এনে আপনার যুক্তি খন্ডন করবে। মার্ক টোয়েনের কথা: Never argue with stupid persons. Sooner or later they will bring you down to their level and beat you with their experience. জীবনে রাজাকার শ্রেণীর কাউকে পথে আনতে পারিনি। তাকে যতই বুঝান না কেন তিনি নতুন নতুন যুক্তি খাড়া করে আপনাকে বিভ্রান্ত করে ফেলবে।
- ছেলেমেয়েদের বিলাস-ব্যসনের জন্য অঢেল টাকা পয়সা যোগান দিবেন না। তাদের নিয়ে আপনার স্বপ্ন এবং প্রত্যাশা সংযত করুন। আপনি নিজে যা পারেননি তার মাধ্যমে তা পূরণ করতে অহেতুক চাপ সৃষ্টি করে মানসিক পীড়ার কারণ হবেন না। তাদের নিজের উদ্যোগে পড়াশোনা করতে উৎসাহ যোগাবেন। গৃহশিক্ষক যতদূর সম্ভব এড়িয়ে যাওয়া ভালো। গৃহশিক্ষকের প্রতি নির্ভরতা বাচ্চাদের নিজস্ব উদ্যোগ ব্যাহত করে, সৃজনশীলতার পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়।
- মাতা-পিতাকে আন্তরিকভাবে সেবা করতে ভুলবেন না। প্রাকৃতিক নিয়মেই হোক কিংবা অন্য কোনো অলৌকিক কারণে, পিতা মাতার আশীর্বাদ ছাড়া জীবনে উন্নতি করা সম্ভব হয় না।
- বিপদ আপদ জীবনের অঙ্গ। বিপদের সময় যখন তা থেকে উত্তরণের কূলকিনারা খুঁজে পাচ্ছেন না, আত্মহননের কথা ভাবছেন, তখন সবচেয়ে উত্তম পন্থা তা থেকে উত্তরণের দায়িত্ব সৃষ্টিকর্তার উপর ছেড়ে দিন।
