October 29, 2025

আমাদের দেশের এক বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের একাধিক জন্ম তারিখ নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলেন। আমরা সে বিতর্কে জড়াবো না। তবে, শুনলে অবাক হবেন, ব্রিটিশ সম্রাজ্ঞি রানী এলিজাবেথও দু-দুটো জন্মদিন পালন করেন। 

তার প্রকৃত জন্মদিন ২১শে এপ্রিল। সেদিন তিনি তার জন্মদিন পালন করেন একেবারে অনাড়ম্বরভাবে। ধারণা করি, তিনি কাস্টার্ড টার্ট সহকারে ব্রেকফাস্ট করেন। তার চারপাশে থাকে তার প্রিয় কুকুরদের কয়েকজন। 

রানী ঘটা করে জন্মদিন পালন করেন জুন মাসের দ্বিতীয় শনিবারে। জুন মাসে জন্মদিন পালনের ট্র্যাডিশন চলে আসছে রানীর গ্রেট গ্র্যান্ড ফাদার সপ্তম এডওয়ার্ডের সময় থেকে। তার রাজত্বকাল ছিলো ১৯০১ থেকে ১৯১০ সাল। তার জন্ম হয়েছিল নভেম্বর মাসে। তবে সে মাসে বৃটেনের আবহাওয়া মোটেই ভালো থাকে না। তাই তিনি সিদ্ধান্ত নেন জুন মাসে জন্মদিন পালন করবেন। সে মাসের দ্বিতীয় শনিবারে ধুমধাম করে প্যারেড দিবসও পালন করা হয়। ‌ সে কারণে ওই দিনকে বেছে নেওয়া হয় জন্মদিন পালনের জন্য। এক ঢিলে দুই পাখি। জন্ম তারিখ পালন করা হলো কিন্তু হৈ হুল্লোড় ধুমধাম করার জন্য বাড়তি খরচটা বেজে গেল। সেই ট্রাডিশন এখনো অন্যান্য রাজা-রাণীদের জন্মদিন পালনের জন্য অনুসরণ করা হয়।

জন্মদিন পালনের আরো কয়েকটি রহস্য নিয়ে কিছু কথা বলা যেতে পারে।

জন্ম তারিখ পাঠান স্টাইল

জন্ম তারিখের ব্যাপারে পাঠানদের সম্পর্কে বেশ কিছু জোকস রয়েছে। যেমন এক পাঠানকে জিজ্ঞেস করা হলো, বয়স কত? উত্তর পাওয়া গেল পঁচিশ বৎসর।

প্রশ্নকর্তা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি তো পাঁচ বছর আগেও বলেছিলে পঁচিশ বছর।

পাঠানের সোজাসাপ্টা উত্তর, পাঠানদের কথায় নড়চড় হয় না। পাঁচ বছর আগে যা বলেছি এখনো তাই বলবো।

গত বছর পাঠান বংশোদ্ভূত পাকিস্তানি ক্রিকেটার শহিদ আফ্রিদি তার আত্মজীবনীতে স্বীকার করেছেন তার বয়স পাবলিক যা জানে তার চেয়ে তিন বছর বেশি। সে কারণে, ১৬ বছর বয়সে সর্বকনিষ্ঠ ক্রিকেটার হিসেবে তিনি সেঞ্চুরি করার যে রেকর্ড করেছিলেন সে রেকর্ড বাতিল করা হয়েছে। আসলে তখন তার বয়স ছিল ১৯ বছর।

জন্ম তারিখ বাংলাদেশ স্টাইল

আমাদের দেশে জন্ম তারিখ লেখা শুরু হয়েছে অল্প কয়েক বছর আগে। আগে ইচ্ছামত কার কত বয়স আন্দাজে বলা হত।

গেরস্থ ঘরে ঘটা করে জন্ম তারিখ লেখার রেওয়াজ ছিল না। বছর ঘুরতেই নতুন নতুন মুখের আগমন হতে থাকলে কাঁহাতক আর তারিখ মুখস্থ রাখা যায়। ‘হ্যাপি বার্থ ডে’ বলে কেক কাটার রেস্ত কত জনেরই বা ছিল?

স্কুলে ভর্তি হবার সময় হলে জন্ম তারিখ জিজ্ঞেস করলে সংগে আসা বাপ চাচা যিনিই থাকেন না কেন সহজে রা কাড়েন না। তবে, ঠারে ঠরে কত বয়স হল তার একটা আইডিয়া দিতে চেষ্টা করেন। যেমন, যে বছর বড় ঝড় হয় অথবা বন্যার পানি ঘরে ঢুকেছিল সে বছর তার জন্ম হয়।

শুনেছি, এক চাচা নাকি স্যারকে বড়ই ধাঁধাঁয় ফেলে দিয়েছিলেন,”তার বয়স ত’ বলতে পারব না ছার, তবে আমার মনে আছে যে বছর আমি বিড়ি ধরি সে বছর তার জন্ম হয়”। বুঝুন ঠ্যালা!

শেষ মেশ রফা হত চোখের নজরের সাহায্যে, ইংরেজিতে বলে আই মেজারমেন্ট। তবে, বয়সজনিত সমস্যাটির ফয়সালার জন্য আরও কিছু কাঠ খড় পোড়াতে হয়।

যেমন, স্যার বললেন, তোমার ছেলের গা-গতর মাশাল্লাহ যে ভাবে বাড়-বাড়ন্ত হয়েছে, পাশ-টাশ ত’ করতে পারবে না তা জানি, কিন্তু সে রকমের দুর্ঘটনা যদি ঘটিয়েই ফেলে চাকরীর বয়স থাকবে না।

–তাহলে, কি করবেন ছার।–পাঁচ বছর লিখি।

–আপনি যা ভাল বোঝেন, ছার।

জানুয়ারি মাসে ভর্তির মৌসুম শুরু হয় বলে ভর্তির তারিখ থেকে পাঁচ বছর আগের জানুয়ারি মাসের কোন এক তারিখকে শুভ জন্মদিন স্থির করে স্কুলের খাতায় লিখে রাখেন।

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Pin It on Pinterest