দই উভয় বাংলার সুস্বাদু খাদ্য কিন্তু নিজস্ব সম্পদ নয়। প্রাক ব্রিটিশ আমলে পর্তুগীজ বণিকেরা দই, পনির, রসগোল্লা, জিলিপি জাতীয় রসালো মিষ্টি তৈরীর কায়দা কানুন নিয়ে আসে। তাদের আগে দুধ জমে গেলে এদেশে দুর্ভাগ্যের চিহ্ন বলে মনে করা হতো। কালক্রমে বাংলাদেশের দক্ষ কারিগরদের ছোঁয়ায় মিষ্টান্ন গুলো নতুন মাত্রা লাভ করেছে। তাহলে ইয়োগার্ট এবং বাংলাদেশের মধ্যে পার্থক্য কি?
ইয়োগার্ট ও দই দেখতে অনেকটা এক রকম মনে হলেও বেশ কিছু পার্থক্য আছে।
ইয়োগার্ট
তৈরি প্রক্রিয়া
দুটোই ভিন্ন ভিন্ন প্রক্রিয়ায় তৈরি করা হয়। দই প্রস্তুত করা হয় আম্লিক বা অ্যাসিডযুক্ত রাসায়নিক পদার্থ যথা ভিনিগার লেবু তেতুল মিশিয়ে দুধ ঘনীভূত করে।
অন্যদিকে, ইয়োগার্ট তৈরি করা হয় জীবাণুর মাধ্যমে দুধ ঘন করে।
জীবাণু নাম শুনে ঘাবড়ানোর কারণ নেই। এগুলো বন্ধুভাবাপন্ন জীবাণু, শরীরের শত্রু জীবাণুকে ধ্বংস করে। নামগুলো খটমটে, মনে রাখা কঠিন, মনে রেখেই বা কি করবেন– Lactobacillus bulgaricus এবং Streptococcus thermophiles.
সুগন্ধ মিশ্রন
দইয়ে সাধারণত কোন সুগন্ধ মেশানো হয় না। ইয়োগার্টে আম, জাম,ভ্যানিলা জাতীয় রসের কৃত্রিম সুগন্ধ মেশানো হয়।
টাঙ্গাইলে কৃত্রিম গন্ধ এবং চিনি ছাড়া শক্ত ধরনের দই, বগুড়ার ট্রেডমার্ক দই, পটুয়াখালী ও সাতক্ষীরার মহিষের ঘন দই এবং অন্য কয়েকটি জায়গায় প্রস্তুত দইয়ের স্বাদ যে কোন দেশে প্রস্তুত ইয়োগার্টর চেয়ে ভালো। বাংলাদেশের সবুজ পশুখাদ্য অন্যতম প্রধান কারণ।
খাদ্যগুণ
দইয়ছ থাকে ক্যালসিয়াম, আয়রন, পটাশিয়াম, ভিটামিন B6. ইয়োগার্ট থাকে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস এবং ভিটামিন B12.
শিল্প বনাম গৃহ
দই গৃহে প্রস্তুত করা যায়। ইয়োগার্ট শিল্পজাত দ্রব্য। শিল্প-কারখানায় প্রস্তুত করা হয়।
উপকার
দই মস্তিষ্ক সচল রাখে, খাদ্য হজমে সহায়তা করে। ইয়োগার্ট উচ্চ রক্তচাপ ও রক্তের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করে।্
