রাজধানী এক্সপ্রেস
কলকাতা—দিল্লি রাজধানী এক্সপ্রেস ট্রেনে কয়েকবার ভ্রমণ করার সুযোগ হয়েছে। সময়মতো চলাচল করে, খাবার-দাবার ভালো। একটু পর পর ভেজ—নন-ভেজ সুমধুর আওয়াজে বাচ্চারা সচকিত হয়ে ওঠে। ভেজ এবং নন-ভেজজর মধ্যে পার্থক্য কি তা জিজ্ঞেস করে নন-ভেজ পছন্দ করে। বড়দের কেউ কেউ ভেজের দিকে হাত বাড়ায়।
আমিষ নিরামিষের ভেজ ননভেজ শেখা সে নতুন নামগুলো মনের কোণে স্থান করে নেয়। দেশে ফিরে এসে কিছুদিন নিজেরাও খাবার-দাবার উপলক্ষে সে নাম গুলো ব্যবহার করি। কয়েকদিন পরে ভুলে যাই। যাত্রাপথে অতিপরিচিত শহর বন্দর এক নজর দেখার সুযোগ হয়।রাজধানী এক্সপ্রেসর ভাড়া তেমন কিছু বেশি নয়। সব মিলিয়ে রাজধানী এক্সপ্রেসে ভ্রমণ করা বেশ উপভোগ্য।
রাজধানী এক্সপ্রেস
ইওরোস্টার
ইউরোপে একবারই ট্রেনে ভ্রমণ করেছি প্যারিস থেকে লন্ডন। ট্রেনের নাম ইউরোস্টার। ইউরোপের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের গ্রামীণ দৃশ্য দেখার সুযোগ হয়। বাড়তি হিসাবে ইংলিশ চ্যানেলের নিচে পৃথিবীর বৃহত্তম টানেলের ভিতর দিয়ে ভ্রমণের থ্রিল অনুভব করা যায়।
কাছে ধারে ইংরেজ সহযাত্রী হলে মুখে খিল লাগিয়ে বসে থাকে। কেউ পরিচয় না করে দিলে ইংরেজদের স্বভাব স্পিকটি নট। তবে, উদ্যোগ নিয়ে আলাপে টেনে আনলে কথা বলে আরাম পাওয়া যায়। তাদের কথাবার্তায় ভদ্রতার ছাপ থাকে। তবে রঙ্গ রসিকতা করে সূক্ষ্মভাবে রেখে ঢেকে।
ফরাসি সহযাত্রী হলে আলাপ-আলোচনা তেমন জমতে চায় না। ইংরেজি জানালেও তাদের সে ভাষায় কথা বলতে চরম অনীহা। ইংরেজদের সাথে তাদের বৈরিতা চিরদিনের। সে ভাষায় কথা বলতে আত্মাভিমান চাঙ্গা হয়ে ওঠে।
চলার পথে অনেক ইতিহাস বিখ্যাত স্থান দৃষ্টিগোচর হয়। মন চলে যায় সুদূর অতীতে রাজা, লর্ড, ব্যারন, নাইট এবং তাদের অত্যাচারে জর্জরিত কৃষক-শ্রমিকের বিচরণ ক্ষেত্রে।
ইউরোস্টার
আ্যমট্রাক
বার দুয়েক নিউইয়র্ক-ওয়াশিংটন রুটে ভ্রমণ করেছি। ট্রেনের নাম আ্যমট্রাক। এক ঝলক আমেরিকার মফস্বল অঞ্চলের ঘরবাড়ি হাট-বাজার কৃষিখামার দেখার সুযোগ পাওয়া যায়। টাকার হিসেবে ভাড়া অবশ্য আমাদের কাছে বেশি মনে হয়।
আমেরিকানরা দিলখোলা মানুষ। অচিরেই সহযাত্রীদের সাথে হাসি ঠাট্টা আলাপ আলোচনায় মেতে ওঠে। সময়টা বেশ ভালো কেটে যায়।
Amtrak
ঢাকা চট্টগ্রাম এক্সপ্রেসওয়ে
বাংলাদেশে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে ভ্রমণ বেশ উপভোগ্য। বাঙ্গালীদের যা স্বভাব, অল্প সময়ের মধ্যে কামরার যাত্রীদের মধ্যে আড্ডা জমে উঠে। পরস্পরের হাঁড়ির খবর, টেলিফোন নম্বর, ঠিকানা বিনিময় হয়। গল্পে সল্পে সময় বেশ কেটে যায়। নুডুলস স্যান্ডউইচ ভাগাভাগি হয়।
ভ্রমণ শেষে বিদায় বেলায় চোখের কোণে জলীয়বাষ্পের আভাস দেখা যায়। অনেক সময় পরিচয় থেকে বিবাহ-শাদী পর্যন্ত গড়ায়।
Dhaka Chittagong express train
