October 30, 2025


িশ এদেশে এসেছিল লুটপাট করতে। সেটা তারা সুচারুভাবে করেছে। জ্ঞান-বিজ্ঞানে যাতে পিছিয়ে থাকে সেজন্য কম চেষ্টা করে নি। স্কুল-কলেজে লেখাপড়া করা হতো শুধু ব্রিটিশদের কেরানিগিরি করতে। অল্পস্বল্প মেধাবীদের দিয়ে নিয়ে আইসিএস বানিয়ে এদেশকে শাসন করার ভিত্তি তৈরি করত।


ব্রিটিশ শাসনের আগে মাদ্রাসায় শিল্প-সাহিত্য, বিজ্ঞান বিষয়ক জ্ঞান দান এবং গবেষণা হত। ব্রিটিশরা কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসা এবং দেওবন্দে মাদ্রাসা সৃষ্টি করে তাদের সিলেবাস থেকে এসব গবেষণা কার্য বন্ধ করে দেয়। সেখানে তারা বিভেদ সৃষ্টির বীজ বপন করে। গোল টুপি না লম্বা টুপি, হাঁটুর নিচে কত দূর পর্যন্ত লুঙ্গি পায়জামা পরা যাবে এ নিয়ে বিতর্কের মালমশলা সাপ্লাই দেয়। এখনো সেই ট্রাডিশন সমানে চলছে।


নবাব, রায় বাহাদুর, খান বাহাদুর, রাজা, মহারাজা, জমিদার শ্রেণীর লোকদের পৃষ্ঠপোষকতা করে তাদের রাজদণ্ড মজবুত করার জন্য খুঁটি হিসেবে ব্যবহার করেছিল। সাধারণ মানুষের কথা তাদের এজেন্ডার মধ্যে ছিল না। দেশ বিভাগের সময় ব্রিটিশ ভারতের শিক্ষার হার ছিল মাত্র শতকরা ১২ জন।
ব্রিটিশ ভারতে অত্যাচার অনাচার লুটপাটের কাহিনী ইংরেজি কোরাতে Prince Yadav ১৫ ই মার্চের একটা উত্তরের গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য বাংলা অনুবাদ করে দেয়া হল।
**ব্রিটিশরা দাবি করে তাদের কারণে এক অখণ্ড ভারতবর্ষ সৃষ্টি হয়েছিল।**
তাদের দাবি অগ্রহণযোগ্য। সম্রাট অশোক ( মোগল আমলেও পুরুষদের একত্রীভূত করা হয়েছিল) মোটামুটি এক অখণ্ড উপমহাদেশের অবয়ব তৈরি হয়েছিল। ‌ অন্যদিকে ব্রিটিশরা খন্ড খন্ড ভূখণ্ড নিয়ে এক একটা দেশীয় রাজ্য সৃষ্টি করে ছেড়াবেড়া অবস্থার সৃষ্টি করে ফেলেছিল। উপমহাদেশ থেকে বিদায়ের আগে ম্যাপ দেখলে বুঝা যায় তাদের দাবি কতটা অসার।

ব্রিটিশরা দাবি করে তারা সতীদাহ প্রথা রদ করেছে
সতীদাহ প্রথা মূলত রাজা রামমোহন রায় এবং অন্যান্য স্থানীয় নেতৃবৃন্দ অক্লান্ত পরিশ্রম এবং দীর্ঘকালব্যাপী প্রচেষ্টার ফসল। ব্রিটিশদের ভূমিকা ছিল নগণ্য এবং পরোক্ষ।
**ব্রিটিশদের দাবি বিধবা বিবাহ এবং কন্যাশিশু হত্যা বন্ধ করেছিল।
একথা সবারই জানা ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর এবং অন্যান্য সংস্কারবাদী উপমহাদেশীয় ব্যক্তিবর্গ কয়েক যুগেরঅচলায়তন ভেঙ্গে বিধবা বিবাহ এবং কন্যা সন্তান হত্যা নিষিদ্ধ করে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেন। এ ক্ষেত্রে ব্রিটিশদের ভূমিকা ছিল পরোক্ষ। তার আগেও ব্রিটিশদের সহযোগিতা ছাড়াই বিভিন্ন রাজন্যবর্গ সতীদাহ প্রথা বিলোপের জন্য ভূমিকা রেখেছিলেন।
ইতোপূর্বে ব্রিটিশদের প্রবর্তিত আইনের কারণে লোকে বিধবা বিবাহ করতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিল। সৃষ্টিকর্তা নাকি তাদের বলেছিল সম্পত্তির অধিকার শুধুমাত্র পুত্র সন্তানের। সে চিন্তা ধারা তারা উপমহাদেশেও আমদানি করে। তার ফলে, মহিলাদের অপাংক্তেয় এবং ঘৃণার চোখে দেখা শুরু হয়। কে তাদের বিবাহ করবে
বর্তমান যুগে নারী ক্ষমতায়ন আন্দোলনের কারণে তাদের সম্পত্তিতে অধিকার, শিক্ষা-দীক্ষার সুযোগ, ভোট দেওয়ার সুযোগ পেয়েছে। এর নতুন ধারার সৃষ্টি ক্ষেত্রে ব্রিটিশদের কোন অবদান ছিল না।

ব্রিটিশ দাবি করে তারা আমাদের দিয়েছে রেলওয়ে চা গণতন্ত্র এবং ইংরেজি ভাষা।*


ব্রিটিশরা রেলপথ সৃষ্টি করেছিল মূলত তাদের নিজস্ব স্বার্থ রক্ষার জন্য। এর জন্য তারা ব্যবহার করে নিজস্ব প্রযুক্তি যন্ত্রপাতি অন্যান্য উপকরণ। প্রতি মাইল রেলপথ তৈরীর জন্য তারা ব্যয় করেছিলেন আমেরিকার তুলনায় নয় গুণ বেশি। মূল্য চুকতে হয়েছিল ভারতীয়দের এবং ব্রিটিশ বিনিয়োগকারীদের তাদের মূলধনের‌ জন্য মুনাফার গ্যারান্টিও দেওয়া হয়েছিল। পন্য পরিবহনের ভালো ছিল খুবই কম কিন্তু ভারতীয়রা তৃতীয় শ্রেণীতে ভ্রমণ করত অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে।

লর্ড‌ মেকলে মনে করতেন ইংরেজি ভাষায় সবচাইতে উন্নত ভাষা এবং ইংরেজদের দায়িত্ব এ দেশের অধিবাসীদের সভ্য করে গড়ে তোলা
তাই যদি হয় তাহলে চীন জাপান ইংরেজি ভাষা ব্যবহার করে কি করে এত উন্নত হল? তারা তো সব কাজ নিজের ভাষাতেই করে। চীন জাপান তাদের রেলপথ গড়েছে বিদেশি সাহায্য ছাড়া।
চা
ব্রিটিশরা তাদের চাহিদা মেটাবার জন্য চীনের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনার জন্য উপমহাদেশের চা উৎপাদনের উদ্যোগ নেয়। এজন্য তারা গাছপালা কেটে সাফ করে ফেলে, উপজাতীয়দের বাসস্থান থেকে উৎখাত করে। উৎপাদিত চা বিদেশে রপ্তানী করে দিত। ভারতীয়দের ভাগ্যে ছিল খুবই কম। ‌ ত্রিশ দশকের বিশ্বব্যাপী মন্দার কারণে চায়ের চাহিদা কমে যাওয়ার ফলে তারা এ দেশের লোকদের চা খাওয়াতে শুরু করে।
ব্রিটিশরা উপমহাদেশ থেকে ৪৫ ট্রিলিয়ন ডলার নিজ দেশে পাচার করে। সবচাইতে উন্নত কয়েকটি দেশের বর্তমান জিডিপি এরকম।
* UK GDP- 2.8 trillion dollar
* US GDP- $21 trillion
* CHINA’S GDP-$15 trillion approx
* Japan’s GDP: $5 trillion
* France: GDP: $2.7 trillion..
* Total: $45.9 trillion
সবচেয়ে উন্নত পাঁচটি রাষ্ট্রের সম্মিলিত জিডিপির সমান তারা উপমহাদেশ থেকে পাচার করে।

আইনের শাসন
১৮৭১ সালের আদমশুমারিতে ব্রিটিশরা তৃতীয় লিঙ্গ হিজড়াদের ক্রিমিনাল উপজাতি হিসেবে চিহ্নিত করে।
তাদের ঔপনিবেশিক শাসনের সমর্থনে ব্রিটিশ ভারতের ইতিহাস নতুন করে লিখে‌ পৃথিবী কে জানাতে চেয়েছেন আমরা অত্যন্ত পশ্চাৎপদ জাতি। এদেশের লোককে সভ্য করার দায়িত্ব তারা নিয়েছে।
ব্রিটিশরা এদেশে যে টেকনোলজি আমদানি করেছে তারা শুধু নিজেদের মুনাফা অর্জনের জন্য। এ দেশের লোকদের জ্ঞান-বিজ্ঞানে উন্নত করার চিন্তাভাবনা তাদের মাথায় ছিল না।
ব্রিটিশরা এদেশে বর্ণভেদ উস্কে দিয়ে জাতিভেদ প্রথা মহামান্বিত করার চেষ্টার ত্রুটি করে নাই। তারা এদেশে জাতিভেদ প্রথা অবসানের জন্য কোনো চেষ্টাই করে নাই।
ব্রিটিশরা ইন্ডিয়ান পেনাল কোডের ৩৭৭ সংযোজন করে ভারতীয়দের মনে বিশ্বাস জমিয়েছে যৌনতা একটা সাধারণ ব্যাপার।
ডিভাইড এন্ড রুল তাদের অনুসৃত নীতির অপরিহার্য অঙ্গ।
ব্রিটিশরা দেখিয়েছে আর্যদের আক্রমনকারী হিসাবে। আমাদের ধমনীতে উচ্চবর্গের আর্য রক্তের কারণে আমরা দলিতদের দাবিয়ে রাখি, আজকের দলিত রাই এদেশের আদি অধিবাসী উচ্চবর্ণের লোকজন বহিরাগত।
এদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা তছনছ করে দেয়ার কারণে ব্রিটিশ আমলে শিক্ষার হার ছিল শতকরা ১২ জন।
ব্রিটিশদের আগে বিশ্ব বাণিজ্যের ২৩% ভারতবর্ষের দখলে ছিল। তাদের নিজেদের শিল্প বাণিজ্য উন্নত করার জন্য এদেশের শিল্প ব্যবস্থাপনা ধ্বংস করে দেয়। বিশ্ব বাণিজ্যে শেয়ার নেমে আসে ২% এ।


ব্রিটিশরা এদেশে ধর্মীয় এবং জাতিগত টেনশন সৃষ্টি করে তাদের কর্তৃত্ব মজবুত করে রেখেছিল।
ব্রিটিশদের কারণে এখনো উপমহাদেশে শিক্ষাব্যবস্থা ঔপনিবেশিক দাস তৈরি করার সবচেয়ে বড় কারখানা।

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Pin It on Pinterest