
আইনস্টাইন নিজেকে একজন সংশয়বাদী মনে করতেন, নাস্তিক নন। তিনি পুনর্জন্মে বিশ্বাস করতেন না। তিনি বলতেন, ‘আমার জন্য একটি জীবনই যথেষ্ট।’
তিনি বিশ্ব মানবিকতায় বিশ্বাসী ছিলেন এবং বেশ কয়েকটি মানবতাবাদী গোষ্ঠীর সাথে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত ছিলেন।
আইনস্টাইন ল্যাবরেটরীতে নয় বরং তার মস্তিষ্কে সমস্যা সমাধানের পথ খুঁজতেন। উদাহরণস্বরূপ, ১৬ বছর বয়সে কল্পনায় চিন্তা করছিলেন করলেন যে তিনি একটি চলন্ত আলোকরশ্মির পাশে রয়েছেন। তার মাথায় প্রশ্ন জাগলো, যদি আলোর গতির সাথে তাল মিলিয়ে চলতে থাকেন, তাহলে কি সে আলোকরশ্মি তাঁর কাছে স্থির মনে হবে না?
আইনস্টাইন ছোটবেলায় মোটেই চটপটে ছিলেন না। থেমে থেমে কথা বলতেন। এ কারণে চিন্তিত হয়ে তার মাতা পিতা তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান।
কর্তৃত্বের প্রতি তিনি বিদ্রোহ মনোভাব পোষণ করতেন। এ কারণে একজন হেডমাস্টার তাকে বহিষ্কার করেছিলেন। অন্যজন বলেছিলেন যে তার ভবিষ্যৎ অন্ধকার।
আইনস্টাইনকে ইসরায়েলের রাষ্ট্রপতির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল যা তিনি ভদ্রভাবে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। তিনি বললেন, রাজকার্যে তার কোনো দিলচসপি নেই, সক্ষমতাও নেই।
আইনস্টাইন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় ফেল করেন। তিনি পদার্থবিজ্ঞান এবং গণিতে অসাধারণ ভাল করেছিলেন, কিন্তু অ-বিজ্ঞান বিষয়গুলিতে ফেল করেন, বিশেষ করে ফরাসি ভাষায়। এক বছর পর পুনরায় আবেদন করলে কৃতকার্য হন।
আইনস্টাইন আপেক্ষিক তত্ত্বের জন্য নোবেল পুরস্কার পাননি। পুরস্কারটি পেয়েছিলেন ফটোইলেক্ট্রিক ইফেক্ট সম্পর্কে তত্ত্বের জন্য ।
স্মৃতিশক্তি খারাপ থাকার জন্য তিনি নাম, তারিখ এবং ফোন নম্বর মনে রাখতে পারতেন না। এটা একদিকে ভালই ছিল কারণ মুখস্থ বিদ্যার উপর নির্ভর না করে প্রতিবার ফ্রেশ চিন্তা ভাবনা করতে পারতেন।
অস্ট্রিয়ান পদার্থবিজ্ঞানী ফ্রেডরিখ হাসেনোহরল আইনস্টাইনের এক বছর আগে মৌলিক সমীকরণ E = mc2 প্রকাশ করেছিলেন। এ কারণে অনেকদিন পর্যন্ত তার সমালোচকরা দাবি করেছিল যে তিনি হাসেনোহারল থেকে সূত্রটি চুরি করেছেন।
আইনস্টাইনের নিজের কোন গাড়ি ছিল না এবং তিনি কখনই ড্রাইভিং শিখেন নাই।
আইনস্টাইন মোজা পরতে পছন্দ করতেন না। তার কাছে মোজা ছিল যন্ত্রণার কারণ সেগুলো প্রায় ছিদ্র হয়ে যেত।
আইনস্টাইনের মস্তিষ্কের প্যারিয়েটাল লোব গড়পরতা মানুষের মস্তিষ্কের চেয়ে ১৫% বড় ছিল।
গ্যালিলিও গ্যালিলি ছিলেন আলবার্ট আইনস্টাইনের প্রিয় বিজ্ঞানী। তিনি তাকে বিজ্ঞানের জনক বলে মনে করতেন।
আইনস্টাইন বর্ণ বৈষম্যকে নিন্দা জানিয়ে তা “সাদা মানুষের রোগ” বলে অভিহিত করেন এবং আমেরিকায় বর্ণবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন।
মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা আগেও আইনস্টাইন তার থিওরি অব এভরিথিং প্রমাণ করার চেষ্টা করছিলেন।
আইনস্টাইন যখন মৃত্যুশয্যায় শুয়েছিলেন, তখন তিনি কেবল তাঁর চশমা, তাঁর লেখার সরঞ্জাম এবং তাঁর সাম্প্রতিক সমীকরণটি তাকে সরবরাহ করতে বলেছিলেন। মৃত্যু আসন্ন জেনেও তিনি তার কর্মকাণ্ড চালিয়ে গিয়েছিলেন।
ইহুদি বংশোদ্ভূত হওয়ার কারণে নাৎসিরা আইনস্টাইনের মাথায় পাঁচ হাজার মার্কিন ডলার পুরস্কার রেখেছিল।
আইনস্টাইনের বার্লিন অ্যাপার্টমেন্টে নাৎসিরা একাধিক বার অভিযান চালায়। শেষ পর্যন্ত তিনি জার্মানি ছেড়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান।
এফবিআই ডিরেক্টর জে এডগার হুভারের মত কিছু আমেরিকান কর্মকর্তা মনে করতেন আলবার্ট আইনস্টাইন একজন সোভিয়েত গুপ্তচর।
তার বিতর্কিত রাজনৈতিক বিশ্বাসের কারণে-সমাজতন্ত্র, নাগরিক অধিকার এবং পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের জন্য তার সমর্থন, অনেক কমিউনিস্ট বিরোধীরা বিশ্বাস করতেন যে আইনস্টাইন একজন বিপজ্জনক ধ্বংসাত্মক লোক ছিলেন।
জুরিখ পলিটেকনিকের আইনস্টাইনের পদার্থবিজ্ঞান শ্রেণীর একমাত্র মহিলা তাকে বিয়ে করেছিলেন। কয়েক বছর পরে তার সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায়। আইনস্টাইনের নোবেল পুরস্কারের টাকা তার প্রাক্তন স্ত্রীর কাছে গিয়েছিল ডিভোর্সের নিষ্পত্তি হিসেবে।
আলবার্ট আইনস্টাইন তার প্রথম স্ত্রীর সাথে প্রতারণা করেছিলেন, তার বৈজ্ঞানিক কৃতিত্বের অবমাননা করেছিলেন, বাড়ির কাজকর্মে সাহায্য করতে অস্বীকার করতেন।
যদিও তিনি একজন নিষ্ঠাবান শান্তিবাদী ছিলেন, আইনস্টাইন রাষ্ট্রপতি রুজভেল্টকে একটি চিঠি লিখেছিলেন, যাতে তিনি নাৎসি জার্মানির আগে একটি পারমাণবিক অস্ত্রের বিকাশকে অগ্রাধিকার দেওয়ার আহ্বান জানান।
আইনস্টাইন এবং অন্যান্য শীর্ষস্থানীয় বিজ্ঞানীরা বলেছিলেন যে তারা উদ্বিগ্ন যে নাৎসি জার্মানি পারমাণবিক শক্তি ব্যবহার করে একটি ‘নতুন ধরনের অত্যন্ত শক্তিশালী বোমা’ তৈরি করতে পারে যা সমগ্র বন্দর ধ্বংস করতে পারে। পরবর্তীতে তিনি চিঠিটিকে তার ‘একটি বড় ভুল’ বলে অভিহিত করেন, জানতে পেরেছিলেন যে জার্মানি কখনই পারমাণবিক বোমা তৈরির কাছাকাছি ছিল না।
আইনস্টাইন যখন তাঁর সাধারণ আপেক্ষিকতার তত্ত্ব প্রকাশ করেন, তখন নিউইয়র্ক টাইমস তাদের সাক্ষাৎকারের জন্য তাদের সংবাদদাতা পাঠায়। নিউইয়র্ক টাইমস সংবাদদাতা, হেনরি ক্রাউচ পাঠকদের আশ্বস্ত করেছিলেন যে আইনস্টাইন একটি বই লিখেছিলেন (আসলে একটি কাগজ) যা ‘বিশ্বের মাত্র ১২ জন মানুষ বুঝতে পারে’।
তিনি বলেছিলেন যে “যদি মৌমাছি পৃথিবীর পৃষ্ঠ থেকে অদৃশ্য হয়ে যায়, তাহলে মানুষের বেঁচে থাকার জন্য মাত্র চার বছর সময় পাবে। তবে, কিছু ভাষ্যকার আইনস্টাইন সে উক্তি করেছিলেন কিনা সেজন্য সন্দিহান।
আইনস্টাইন নিয়ম করে প্রতিদিন হাঁটতেন যখন তিনি নিউ জার্সির প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করছিলেন, তখন দেড় মাইল পথ হেঁটে সেখানে ফিরে যেতেন।
আইনস্টাইনের শেষ কথা বলেছিলেন একজন নার্সের কাছে জার্মান ভাষায়। নার্স জার্মান ভাষা জানতেন না। তাই তার শেষ কথাগুলো কারো জানা হলো না।